শনিবার, ২৮ মে, ২০১৬

মুজঃফরপুরে খুব ভালো অমৃতি পাওয়া যাইত। বাড়ির নিকটেই একটি মিষ্টির দোকান ছিল। প্রায়ই সেখান হইতে গরম গরম অমৃতি আনা হইত। এক দিন বর্ষাকালের দ্বিপ্রহরে প্রবল বেগে বৃষ্টি পড়িতেছিল। এত জোরে বৃষ্টি হইতেছিল যে, ঘরের বাহিরে যাওয়া একেবারেই অসম্ভব। ছাতি লইয়া গেলেও রক্ষা নাই, ভিজিতেই হইবে। বেলা প্রায় তিনটা বাজিয়া গেল। বৃষ্টি থামার কোন লক্ষণ নাই। আমরা সবাই ঠাকুরকে লইয়া নানা বিষয়ে কথা বলিতেছি। হঠাত আমি বলিলাম, "এখন যদি গরম গরম অমৃতি পাওয়া যাইত তবে কেমন মজা হইত!" একটু পরে ঠাকুর খড়ম পায়ে দিয়া নিচে নামিয়া গেলেন। ভাবিলাম, ঠাকুর পস্রাব করিতে যাইতেছেন। উপরে যে পস্রাবাগারটি ছিল সে ঘরটিতে মাথা নিচু করিয়া যাইতে হয়। ঠাকুর মাথা নিচু করিয়া কথাও যান না। তাই এই ঘরে প্রবেশ করার সময় তাঁহার কপালে ধাক্কা লাগিয়া ফুলিয়া যায়। নিচের পস্রাবাগারটি বড়, তাই উপরের ঘরটি তালা বন্ধ করিয়া রাখিয়াছি। নীচের ঘরের দরজা বড়, মাথায় আঘাত লাগার সম্ভাবনা নাই। তাই তিনি সর্ব্বদা মলমূত্র ত্যাগ করিতে নীচে যাইতেন। ঠাকুরের খড়মের শব্দে কিন্তু বুঝিলাম তিনি সদর দরজার নিকটে গেলেন এবং ততক্ষনাত ফিরিলেন। উপরে যখন উঠিলেন, দেখিলাম তাঁহার হাতে একটি চুপড়ি বোঝাই গরম অমৃতি রহিয়াছে। অমৃতি দেখিয়া মনে মনে খুব খুশি হইয়াছি। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, "এই অমৃতি কোথায় পাইলেন ? আপনি বাহিরে যান নাই, আর বাহিরে যাওয়ার তো উপায় নাই।" ঠাকুর বলিলেন, "একজন ভক্ত দিয়া গেল। কেন? সে ডাক দিল আপনারা শোনেন নাই?" আমি বলিলাম, "কোন ডাকই ত শুনি নাই।" ঠাকুর বলিলেন, "কান থাকলে তো শুনবেন।" তখন প্রবল বেগে বৃষ্টি পড়িতেছে। আমাদের আনন্দ আর দেখে কে? সবাই খুব আনন্দ করিয়া অমৃতি প্রসাদ পাইলাম। ঠাকুরকে অমৃতি গ্রহনের জন্য প্রার্থনা করিলাম। কিন্তু তিনি স্বীকৃত হইলেন না। এই ভাবে তিনি আমাদের রাবড়ি ও বালুসাইও খাওয়াইছেন। শ্রীগুরু শ্রীশ্রী রামঠাকুর শ্রী রোহিনী কুমার মজুমদার পৃষ্ঠা: ৪৮

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন