কর্মবহুল জীবনে কয়েকদিন বিশ্রাম লইতে হরিদ্বারে আসিলেন একজন চিকিত্সক।
একদিন হৃষিকেশ আসিয়া সন্ধ্যার পূর্বে একাকী জঙ্গলের রাস্তা ধরিয়া আপন মনে
চলিয়াছেন। সারা বত্সর শহরের কোলাহলের মধ্যে থাকিতে হয়। তাই সাময়িক নির্জন
বনানীতে একাকী চলিতে তাঁহার ভালই লাগিতেছিল। এদিকে সন্ধ্যার অন্ধকার ক্রমেই
গাড় হইতেছিল আনমনা ডাক্তার ভদ্রলোকের সেদিকে এতটুকু ভ্রুক্ষেপ নাই।
অকস্মাৎ সামান্য বস্ত্রে আবৃত শীর্ণ দেহি একজন বৃদ্ধ তাঁহার সম্মুখে আসিয়া কহিলেন, 'আর আউগাইবেন না সন্ধ্যা হইছে এখনই নানান জন্তু জানোয়ার নাইমা আসব।'
বৃদ্ধের সাবধান বাণীতে সম্বিত ফিরিল চিকিত্সক ভদ্রলোকের। সত্যই সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনাইয়া আসিতেছে। ফিরিয়া যাইতে যাইতে পুরাপুরি অন্ধকার রাত্রি নামিয়া আসিবে। ভাবিতে ভাবিতে ভদ্রলোক জিজ্ঞাসা করিলেন, "আপনি কি করে যাবেন আপনারও তো ভয় আছে জন্তু জানোয়ারের?
তাহার উত্তরে বৃদ্ধ বলিলেন,"আমি দরিদ্র ব্রাহ্মন।"
তাহা শুনিয়া চিকিত্সক ভদ্রলোক হাসিয়া কহিলেন,
-দরিদ্র ব্রাহ্মণকে তো হিংস্র জানোয়ার রেয়াত করবে না।
-ভগবানের নাম করলে কোন ভয় নাই।
এই বলিয়া বৃদ্ধ ব্রাহ্মন একটি ঈশ্বরীয় নাম বলিয়া বনানীর একটি ছোট পথে দ্রুত অদৃশ্য হইয়া গেলেন। কোন কিছু বুঝিবার আগেই বৃদ্ধকে অদৃশ্য হইয়া যাইতে দেখিয়া বিমূড়ের মত তাঁহার গমন পথের দিকে চাহিয়া অল্পক্ষণ পরে ফিরিয়া আসিতে তাড়াতাড়ি হাঁটিতে লাগিলেন। ফিরিয়া আসিতে রাত্রি হইয়া গেল। রাত্রিতে বনের মাঝে চলিতে মনে ভীতি সঞ্চার হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু অন্ধকারময় জঙ্গলের রাস্তায় আসার সময় বৃদ্ধের কথা, তাঁহার দেয়া নামের কথা, এইসব ভাবিতে থাকায় কোনরূপ ভয় অনুভব হয় নাই সেদিন সেই চিকিত্সকের।
এই ঘটনার প্রায় দুই বত্সর পরে তিনি কলিকাতায় একজন মুমূর্ষু রোগীর চিকিত্সার ডাক পাইয়া সেই রোগীর গৃহে আসিলেন চিকিত্সকের ভূমিকা পালনে। যেই ঘরে রোগী শায়িত ছিল সেই ঘরের দেয়ালে একটি ছবি দেখিয়া সেই গৃহের একজনকে ডাক্তারবাবু জিজ্ঞাসা করিলেন, 'দেয়ালে ওই ছবির ভদ্রলোক আপনাদের কে হন?'
-ইনি আমাদের গুরুদেব শ্রীশ্রী রামঠাকুর। তিনি এখন কোথায় আছেন।
-এখন তিনি নেই, কয়েক বত্সর হলো দেহ রেখেছেন।
-কতদিন আগে দেহ রেখেছেন।
-তা প্রায় ছয় সাত বত্সর হবে।
বিস্মিত ডাক্তারবাবু বড় বড় চোখে চাহিয়া বলিলেন,
-'অসম্ভব হইতেই পারেনা, আপনার হিসেবে ভুল হচ্ছে, দুই বছরও হয়নি হৃষিকে ষের জঙ্গলে এনার সঙ্গে আমার দেখা হয়। রাতের অন্ধকারে আমার ভয় দূর করতে একটি মন্ত্রও আমায় দিয়েছিলেন।'
বলিয়া সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করিলেন তিনি। সব শুনিয়া সেই গৃহের সকলে ডাক্তারবাবুকে ধন্য দিতে লাগিলেন। গৃহকর্ত্তা বলিলেন, 'ডাক্তার, জন্মান্তরের সুকৃতিতে আপনি ঠাকুর রামচন্দ্রদেবের কাছে দীক্ষা মন্ত্র পেলেন তাঁহার প্রকট লীলা সংবরণের পরে।'
সেই গৃহবাসিগন শ্রী সদানন্দ চক্রবর্তী মহাশয়ের সুপরিচিত। তিনি পরে সেই চিকিত্সকের সহিত পরিচিত হইয়া শ্রীশ্রী ঠাকুরের সেই লীলামৃত ঘটনার কথা বিশদে শুনিয়া বলেছিলেন,'শ্রীশ্রী রামঠাকুর অদ্যপিও এমন করিয়া সুক্ষ্মদেহে নাম দিয়া যাইতাছেন।'
অকস্মাৎ সামান্য বস্ত্রে আবৃত শীর্ণ দেহি একজন বৃদ্ধ তাঁহার সম্মুখে আসিয়া কহিলেন, 'আর আউগাইবেন না সন্ধ্যা হইছে এখনই নানান জন্তু জানোয়ার নাইমা আসব।'
বৃদ্ধের সাবধান বাণীতে সম্বিত ফিরিল চিকিত্সক ভদ্রলোকের। সত্যই সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনাইয়া আসিতেছে। ফিরিয়া যাইতে যাইতে পুরাপুরি অন্ধকার রাত্রি নামিয়া আসিবে। ভাবিতে ভাবিতে ভদ্রলোক জিজ্ঞাসা করিলেন, "আপনি কি করে যাবেন আপনারও তো ভয় আছে জন্তু জানোয়ারের?
তাহার উত্তরে বৃদ্ধ বলিলেন,"আমি দরিদ্র ব্রাহ্মন।"
তাহা শুনিয়া চিকিত্সক ভদ্রলোক হাসিয়া কহিলেন,
-দরিদ্র ব্রাহ্মণকে তো হিংস্র জানোয়ার রেয়াত করবে না।
-ভগবানের নাম করলে কোন ভয় নাই।
এই বলিয়া বৃদ্ধ ব্রাহ্মন একটি ঈশ্বরীয় নাম বলিয়া বনানীর একটি ছোট পথে দ্রুত অদৃশ্য হইয়া গেলেন। কোন কিছু বুঝিবার আগেই বৃদ্ধকে অদৃশ্য হইয়া যাইতে দেখিয়া বিমূড়ের মত তাঁহার গমন পথের দিকে চাহিয়া অল্পক্ষণ পরে ফিরিয়া আসিতে তাড়াতাড়ি হাঁটিতে লাগিলেন। ফিরিয়া আসিতে রাত্রি হইয়া গেল। রাত্রিতে বনের মাঝে চলিতে মনে ভীতি সঞ্চার হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু অন্ধকারময় জঙ্গলের রাস্তায় আসার সময় বৃদ্ধের কথা, তাঁহার দেয়া নামের কথা, এইসব ভাবিতে থাকায় কোনরূপ ভয় অনুভব হয় নাই সেদিন সেই চিকিত্সকের।
এই ঘটনার প্রায় দুই বত্সর পরে তিনি কলিকাতায় একজন মুমূর্ষু রোগীর চিকিত্সার ডাক পাইয়া সেই রোগীর গৃহে আসিলেন চিকিত্সকের ভূমিকা পালনে। যেই ঘরে রোগী শায়িত ছিল সেই ঘরের দেয়ালে একটি ছবি দেখিয়া সেই গৃহের একজনকে ডাক্তারবাবু জিজ্ঞাসা করিলেন, 'দেয়ালে ওই ছবির ভদ্রলোক আপনাদের কে হন?'
-ইনি আমাদের গুরুদেব শ্রীশ্রী রামঠাকুর। তিনি এখন কোথায় আছেন।
-এখন তিনি নেই, কয়েক বত্সর হলো দেহ রেখেছেন।
-কতদিন আগে দেহ রেখেছেন।
-তা প্রায় ছয় সাত বত্সর হবে।
বিস্মিত ডাক্তারবাবু বড় বড় চোখে চাহিয়া বলিলেন,
-'অসম্ভব হইতেই পারেনা, আপনার হিসেবে ভুল হচ্ছে, দুই বছরও হয়নি হৃষিকে ষের জঙ্গলে এনার সঙ্গে আমার দেখা হয়। রাতের অন্ধকারে আমার ভয় দূর করতে একটি মন্ত্রও আমায় দিয়েছিলেন।'
বলিয়া সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করিলেন তিনি। সব শুনিয়া সেই গৃহের সকলে ডাক্তারবাবুকে ধন্য দিতে লাগিলেন। গৃহকর্ত্তা বলিলেন, 'ডাক্তার, জন্মান্তরের সুকৃতিতে আপনি ঠাকুর রামচন্দ্রদেবের কাছে দীক্ষা মন্ত্র পেলেন তাঁহার প্রকট লীলা সংবরণের পরে।'
সেই গৃহবাসিগন শ্রী সদানন্দ চক্রবর্তী মহাশয়ের সুপরিচিত। তিনি পরে সেই চিকিত্সকের সহিত পরিচিত হইয়া শ্রীশ্রী ঠাকুরের সেই লীলামৃত ঘটনার কথা বিশদে শুনিয়া বলেছিলেন,'শ্রীশ্রী রামঠাকুর অদ্যপিও এমন করিয়া সুক্ষ্মদেহে নাম দিয়া যাইতাছেন।'
ছন্নাবতার শ্রীশ্রী রামঠাকুর
শ্রী সদানন্দ চক্রবর্তী
পৃষ্ঠা: ৩৫৭
শ্রী সদানন্দ চক্রবর্তী
পৃষ্ঠা: ৩৫৭
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন