সোমবার, ৩ আগস্ট, ২০১৫



দক্ষিনাকালীর পূজা ও নরনারায়ণ সেবা

কালীঘাটে শ্রীশ্রী ঠাকুরের মঙ্গলার্থে দক্ষিনা কালীকে পুজো দিতে আর দরিদ্র নর নারায়নদের প্রসাদ গ্রহণে নিমন্ত্রণ করতে সানন্দে আগ্রহী হলেন ডাঃ দাসগুপ্ত। গুরুর যে কোনও আদেশ দাসগুপ্তের শিরোধার্য। তার অতি ভাগ্য বলে গুরু তাকে স্নেহের আহ্বান করে সঠিক কাজে নিয়োজিত করেন। তাই দক্ষিনা কালীর পূজার আদেশে তিনি ধন্য হলেন। চললো ব্যবস্থাপনা।
দরিদ্র নর নারায়নদের প্রসাদ গ্রহনের সময় দাসগুপ্তকে সাবধান হতে নির্দেশ দিয়ে ঠাকুর বললেন-
"দেখিবেন তাহারা পরস্পর ঝগড়া-ঝাটি, অশ্লীল গালাগালি, কুত্সিত আচরণ করিতেছে। আপনি সেদিকে দেখিবেন না। আপনাদের দেখিয়া সঙ্গে সঙ্গে তাহারা চক্ষু বুজিয়া কেহ কালী-কালী, কেহ শিব-শিব, কেহবা হরি-হরি জপ করিতেছে। আপনি এগুলি দেইখ্যা রাগ করিবেন না। হাত জোড় কইরা পরের দিন সকলকে প্রসাদ গ্রহনের নিমন্ত্রণ কইরা আসবেন অতি শ্রদ্ধায়।''
পূজার নির্দিষ্ট দিনে পার্সে মাছ জোগাড় করা হল। ওই মাছে ভোগ তৈরী করে দক্ষিনা কালীর পূজা হলো কালীঘাটে। শুরু হল দরিদ্র নরনারায়নের সেবা। প্রচুর পরিমানে প্রসাদ পেয়ে সবাই হল তুষ্ট, আনন্দিত। দাসগুপ্ত তখন নাট মন্দিরে বসে সমাহিত চিত্তে গুরু প্রদত্ত নাম জপ করছিলেন। পূজা শেষ হতে একজন পাণ্ডা ছুটে এসে ধ্যান মগ্ন দাসগুপ্তকে টেনে আনলেন আশীর্বাদের জন্য। নিয়ে গেলেন মন্দিরের গর্ভগৃহে। দাসগুপ্ত সাষ্টাঙ্গে প্রনাম করে উঠে তাকালেন মায়ের মুখের দিকে। কিন্তু একী! কোথায় মা, এ যে ঠাকুরের মুন্ডমালিনী রূপ। মায়ের আসনে হাসিমুখে বসে আছেন শ্রীশ্রী ঠাকুর। গলায় তাঁর মুণ্ডমালা ও লাল জবার মালা। পায়ে লালফুলের সচন্দন ডালি। ঠাকুরের পাদপদ্মে সিঁদুরের লাল আভায় শ্রীপদ আলোকোজ্জ্বল। পর মুহূর্তেই আবার দেখতে পেলেন দক্ষিনাকালীর বিমোহিত রূপ। এ এক অদ্ভূত অবস্থা। প্রমান হয়ে গেল গুরু দেহই সর্ব দেব-দেবীর বিশ্রামাগার, লীলা নিকেতন। গুরুই শাশ্বত সনাতন পুরুষ।


মন্নাথঃ শ্রীজগন্নাথো, মদগুরুঃ শ্রীজগদগুরুঃ।
মমাত্মা সর্বভূতাত্মা তস্মৈ শ্রী গুরুবে নমঃ।।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন