রবিবার, ২ আগস্ট, ২০১৫



ঠাকুর ও ভিন্নভাসী ভক্ত

ইন্দুভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় লিখছেন - পুরী চক্রতীর্থে আছি। একদিন সকাল বেলা দুই জন মাদ্রাজি ব্রাহ্মন ডঃ প্রভাত চন্দ্র চক্রবর্তীর এক পত্র নিয়া উপস্থিত। পত্রখানা বাংলায় লেখা- ইহাতে লেখা- এই লোকদুটি ভারত ধর্ম মহামণ্ডলের প্রধান পুরোহিত। ইহাদের নিকট ধর্ম সম্বন্ধে কয়েকটি প্রশ্ন উপস্থিত হইয়াছে যাহার সমাধানের জন্য ইঁহাদিগকে ঠাকুরের নিকট পাঠাইতেছি। ইঁহারা ইংরাজি জানেন। তুমি প্রশ্নগুলি শুনিয়া ঠাকুরকে বলিয়া তাহার উত্তর ইঁহাদিগকে ইংরাজিতে বুঝাইয়া দিবে। ঠাকুর সংস্কৃতে বলিলে ইঁহাদের নিকট আমি অত্যন্ত খেলো হইব।
ঠাকুর একখানা তক্তপোষের উপর দক্ষিন দিকে মুখ করিয়া বসিয়াছিলেন। প্রভাতবাবুর পত্র শুনিয়া ঠাকুর বলিয়াছিলেন ভালো কথা, বাংলাই বলিতে পারি না সংস্কৃত বলবো কেমনে। আগন্ত্তকদ্বয় ঠাকুরের দিকে পিছন করিয়া উহাদের প্রশ্নগুলি আমাকে ইংরাজিতে বলিতে লাগিলেন। কিন্তু তাহার ভাব ঠিক রাখিয়া বাংলায় ঠাকুরকে বুঝাইয়া দেওয়া আমার বিদ্যায় কুলাইল না। ঠাকুর আমাকে বলিলেন- "ইহাদের জন্য একটা তরমুজ আনেন গিয়া।" আমিও রক্ষা পাইলাম। মিউনিসিপ্যাল মার্কেটে শ্রদ্ধেয় ভ্রাতা ভুবন মোহন মুখোপাধ্যায়ের বাসায় ঘন্টা খানেক কাটাইয়া একটি তরমুজ নিয়া আসিলাম। আমি দোতালায় উঠিয়া দেখি ঠাকুরের পায়ে দুই ব্রাহ্মন নমস্কার করিতেছেন, আর তাহাদের মাথায় হাত রাখিয়া ঠাকুর বলিতেছেন; "গোবিন্দ গোবিন্দ।" মাদ্রাজি ব্রাহ্মন দু'জন পিতামাতা ভিন্ন পায়ে পড়িয়া কাহাকেও নমস্কার করেন নাই। তাঁহাদের প্রশ্ন সমূহের উত্তর সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করিতে বলিলেন যে- যে সব প্রশ্ন উদয় হইয়াছিল সবগুলিরই অত্যন্ত সন্তোষজনক উত্তর পাইয়াছেন। এই সম্বন্ধে আরও যে সব প্রশ্ন উদয় হইতে পারে তাহারও মিমাংসা হইয়াছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন