"মন্ত্র" "নাম" "নাম করা" "নাম সংকীর্তন" কাহাকে বলে?
বেদবানী ২য় খন্ড ১৩২ নং পত্র
"প্রাণ অর্থাৎ যাহা শ্বাস-প্রশ্বাস চলিয়া থাকে, ইহাই ভগবান। ইহাকেই স্থির করিয়া যতটুকু সময় রাখা যায় ততটুকু সময়ে ভগবানের নাম করা হয় এবং ইহার স্থির অবস্থায় নিবার জন্য মনের যে বেগ তাহারই নাম মন্ত্র। যখন এই প্রাণেতে স্থির বুদ্ধি অর্থাৎ প্রাণ স্থির বোধ হইবে তাহাকে স্থির আত্মা বলিয়া জানিবেন। অতএব যত সময় পারেন ঐ প্রানের স্থির করিবার জন্য চেষ্টা করিবেন, এই অনুষ্ঠানের নামই নাম করা, অর্থাৎ এই স্থিরের অধীন থাকার নামকে নাম বলে। .....সকল অবস্থাতেই এই ভূত প্রকৃতি মুক্তির জন্য এই প্রানের স্থির করার আশ্রয় নিয়া [থাকিবেন] এই প্রানের স্থির বৈ আর কিছুই নাই এই জ্ঞানকে নাম সংকির্ত্তন বলিয়া জানিবেন।"
শ্রীশ্রী ঠাকুরের ১৩২ নং পত্রখানা এবং তত্পূর্ব্বে লিখিত নামের উপদেশ পূর্ণ অন্য পত্রগুলির সারমর্ম্ম আমাদের অন্তরে ধারণ করিতে পারিলে নামের সেবা দ্বারা নামের কৃপা লাভ করিব ইহাতে কোন সন্দেহ নাই।
তবে যদি কেহ তাঁহার বাণীতে সন্দিহান হন তবে মুণ্ডকোপনিষদে ঋষিগণ নাম জপের যে উপদেশ দিয়াছেন তাহা অনুধাবন করিয়া দেখিবেন যে ঠাকুরের বাণী ও উপনিষদের উক্তিতে কোন পার্থক্য নাই।
প্রনবো ধনুঃশরো হ্যাত্মা ব্রহ্ম তল্লক্ষ্যমুচ্যতে।
অপ্রমত্তেন বেদ্ধব্যং শরবত্তনময়ো ভবেত।
মুণ্ডকোপনিষদ ২/২/৪
তির, ধনু, লক্ষ্যবস্তু এই তিন বস্তুর চিন্তা করিয়া এই শ্লোকটি আস্বাদন করিতে হইবে।
ধনু= প্রণব, অম, নাম।
তির= প্রাণ
লক্ষ্য বস্তু =পরমাত্মা, সত্য, ব্রহ্ম।
যখন প্রাণ স্থির বোধ হইবে তাহাকে ঠাকুর স্থির আত্মা বুঝাইয়াছেন। স্থির আত্মাই পরমাত্মা ইহাই লক্ষ্যবস্তু।
ব্যাধ তাহার লক্ষ্যবস্তু পাখীকে বিদ্ধ করিতে হইলে ধনুতে তির সংযোগ করিয়া পাখীর প্রতি তন্ময় হইয়া তীর নিক্ষেপ করিলে পাখী বিদ্ধ করিতে পারে। সাধক এখন ব্যাধের মত প্রাণপাখী অর্থাৎ পরমাত্মার সঙ্গে আবদ্ধ হইতে হইলে নাম ধনুতে "প্রাণ" শর সংযোগ করিয়া তন্ময়তা আনিতে পারিলেই লক্ষ্য বস্তু লাভ করিবেন; ইহাই নাম ধনুতে প্রাণ শর দিয়া ব্রহ্মকে বিদ্ধ করা। নামকে প্রানের সঙ্গে যুক্ত না করিয়া সাধক কখনও লক্ষ্যবস্ত্তুতে পৌঁছিতে পারে না।
কলিযুগে সত্যনারায়নের সেবায় সত্যপীঠ অর্থাৎ আসনটি সত্যের প্রতীক, ধনু হইল নাম, তীর হইল প্রাণ; এই তিন সংযুক্ত করিয়া দেওয়া হয়। ইহার তাত্পর্য্য এই যে নাম প্রানের সঙ্গে যোগ করিয়া নাম করিতে রুচি, তন্ময়তা আসে। নাম, প্রাণ এবং তন্ময়তা এক তিনের যোগ হইলেই সত্যপদ ছাড়া হয় না। ইহাই জ্ঞানযোগ, ধ্যানযোগ, ও ভক্তিযোগের মর্ম্মার্থ। যোগ দ্বারাই যোগেশ্বররেশ্বর গোবিন্দ প্রাপ্তি হয়।
সত্যনারায়ণ ব্রতে যে সিন্নি দেওয়া হয় তাহা জীবনের ভাগ্যের ভোগ নিবেদন- ভোগদান করিতে করিতে দানের অর্থাৎ ভাগ্যের আর যখন কিছুই অবশিষ্ট থাকিবে না- তখনই সত্য অর্থাৎ মহাপ্রসাদ প্রাপ্তি হয়। ইহাই শ্রীশ্রী ঠাকুরের আচরিত, প্রচারিত "সত্যনারায়ণ ব্রত" সত্যব্রত, পতিব্রত।
শ্রীশ্রী রাম পূজা (শ্রীশ্রী রামঠাকুর প্রসঙ্গে)
ডাঃ শ্রীযতীন্দ্র চন্দ্র দেব রায়
ধনু= প্রণব, অম, নাম।
তির= প্রাণ
লক্ষ্য বস্তু =পরমাত্মা, সত্য, ব্রহ্ম।
যখন প্রাণ স্থির বোধ হইবে তাহাকে ঠাকুর স্থির আত্মা বুঝাইয়াছেন। স্থির আত্মাই পরমাত্মা ইহাই লক্ষ্যবস্তু।
ব্যাধ তাহার লক্ষ্যবস্তু পাখীকে বিদ্ধ করিতে হইলে ধনুতে তির সংযোগ করিয়া পাখীর প্রতি তন্ময় হইয়া তীর নিক্ষেপ করিলে পাখী বিদ্ধ করিতে পারে। সাধক এখন ব্যাধের মত প্রাণপাখী অর্থাৎ পরমাত্মার সঙ্গে আবদ্ধ হইতে হইলে নাম ধনুতে "প্রাণ" শর সংযোগ করিয়া তন্ময়তা আনিতে পারিলেই লক্ষ্য বস্তু লাভ করিবেন; ইহাই নাম ধনুতে প্রাণ শর দিয়া ব্রহ্মকে বিদ্ধ করা। নামকে প্রানের সঙ্গে যুক্ত না করিয়া সাধক কখনও লক্ষ্যবস্ত্তুতে পৌঁছিতে পারে না।
কলিযুগে সত্যনারায়নের সেবায় সত্যপীঠ অর্থাৎ আসনটি সত্যের প্রতীক, ধনু হইল নাম, তীর হইল প্রাণ; এই তিন সংযুক্ত করিয়া দেওয়া হয়। ইহার তাত্পর্য্য এই যে নাম প্রানের সঙ্গে যোগ করিয়া নাম করিতে রুচি, তন্ময়তা আসে। নাম, প্রাণ এবং তন্ময়তা এক তিনের যোগ হইলেই সত্যপদ ছাড়া হয় না। ইহাই জ্ঞানযোগ, ধ্যানযোগ, ও ভক্তিযোগের মর্ম্মার্থ। যোগ দ্বারাই যোগেশ্বররেশ্বর গোবিন্দ প্রাপ্তি হয়।
সত্যনারায়ণ ব্রতে যে সিন্নি দেওয়া হয় তাহা জীবনের ভাগ্যের ভোগ নিবেদন- ভোগদান করিতে করিতে দানের অর্থাৎ ভাগ্যের আর যখন কিছুই অবশিষ্ট থাকিবে না- তখনই সত্য অর্থাৎ মহাপ্রসাদ প্রাপ্তি হয়। ইহাই শ্রীশ্রী ঠাকুরের আচরিত, প্রচারিত "সত্যনারায়ণ ব্রত" সত্যব্রত, পতিব্রত।
শ্রীশ্রী রাম পূজা (শ্রীশ্রী রামঠাকুর প্রসঙ্গে)
ডাঃ শ্রীযতীন্দ্র চন্দ্র দেব রায়
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন