শনিবার, ২৫ জুলাই, ২০১৫



শ্রীশ্রী ঠাকুর যে বুজরুকদের সকল সময়ই এড়াইয়া চলিতে আমাদিগকে নির্দ্দেশ দিয়াছেন তাহা নিম্নলিখিত ঘটনা হইতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হইবে।
এক বত্সর আমাদের নোয়াখালী শহরে একজন যুবক সাধু গিয়াছিলেন। ঘটনাচক্রে আমাদের একজন শ্রদ্ধেয় গুরুভ্রাতার বাড়ীতে তিনি উঠিয়াছিলেন এবং তাঁহারা তাঁহার প্রতি আকৃষ্ট হইলেন। ঐ সাধুটির ব্যাবহার আমাদের ঠাকুরের ব্যাবহারের সম্পূর্ণ বিপরীত দেখিয়া আমরা অন্য যে কয়েকজন গুরুভ্রাতা তখন নোয়াখালী শহরে ছিলাম, সকলেই মনে মনে তাঁহার প্রতি বিরক্ত হইলাম এবং আমাদের যে গুরুভ্রাতাটি তাঁহার প্রতি খুবই আকৃষ্ট হইয়াছিলেন, তাঁহার ঐ ভ্রান্তিতে আমরা একটু দুঃখিতও হইয়াছিলাম। শ্রীশ্রী ঠাকুরের সহিত কয়েকদিন পরই দেখা হইলে আমি ঐ সাধুকে তিনি চিনেন কিনা জিজ্ঞেস করিলে ঠাকুর তাঁহাকে চিনেন না বলিয়া বলিলেন। আমি বলিলাম যে, তিনি অনেকেরই গুরু কি নাম দিয়াছিলেন তাহা বলিয়া দিতেন এবং তাঁহার অপেক্ষা অনেক বেশী বয়সের ভ্দ্রলোকদেরও 'তুই' বলিয়া সম্বোধন করিতেন। আমার সমক্ষেই একজন সাব-জজ কে বলিলেন, 'তর তো শিব।' এই কথাগুলি শুনিয়া ঠাকুর বলিলেন, "এ ত ভাল না। এ ত বুজরুক। একজনের মনের কথা বলিয়া দেওয়া ত কিছুই নয়। একটু সামান্য প্রক্রিয়া করিলেই লোকের মনের কথা বলিয়া দিতে পারা যায়।" তিনি ঐ প্রক্রিয়ার কথা আমাকে তখন বলিয়াছিলেন। কিন্তু তাহা সম্পূর্ণ মনে না থাকায় এবং অনাবশ্যক বোধে আমি আংশিকভাবেও তাহা প্রকাশ করিলাম না। বস্ত্ততঃপক্ষে ঐ সময়ে এবং পরেও ঐ সাধুর কথা ও আচরণ সম্বন্ধে আমি নিন্দনীয় অনেক কথা শুনিয়াছি এবং তাহার প্রভাবও নোয়াখালী হইতে একেবারেই লুপ্ত হইয়াছে।
শ্রীশ্রী ঠাকুর রামচন্দ্রদেব স্মরণে
শ্রী শুভময় দত্ত
পৃষ্ঠা: ১০১

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন