শনিবার, ১১ জুলাই, ২০১৫

গুরু কীভাবে আশ্রিতের ডাকে আবির্ভূত হয়ে ভক্তকে উদ্ধার করেন, নিশঙ্ক চিত্তে এগিয়ে যেতে পারে তার পথ প্রদর্শন করেন এমন একটি ঘটনা ঠাকুরের একান্ত শিষ্য আগরতলার প্রতিথযশা প্রধান প্রধান শিক্ষক শিতিকণ্ঠ সেনগুপ্ত মহাশয় জানিয়েছেন। তিনি নিজে পূজায় উপস্থিত ছিলেন। কুঞ্জবন হিন্দি কলেজ হোস্টেলে পূজা শেষে যোগেশ্বর কর্মকারের জীবনে ওই অদ্ভূত ঘটনা ঘটেছিল। শ্রীশ্রী সত্যনারায়ণ পূজার ব্যাবস্থা ওই হোস্টেলে হয় এবং তার পূজক ছিলেন তারিনী ভট্টাচার্য। সত্যনারায়ণ পূজা, নাম,গান,ভোগ নিবেদন, আরাধনা এবং প্রসাদ বিতরণ এসব শেষ হতে রাত ১২টা বেজে যায়। তখনকার আগরতলা দিনেই শোনশান আর এত গভীর রাতে সকলকে প্রসাদ বিতরণ শেষ করে ও নিজে প্রসাদ গ্রহণ করে যখন বাড়ির দিকে চললেন কর্মকার, সঙ্গিগণ অন্য রাস্তায় চলে যাওয়াতে তিনি প্রায় ছুটতে ছুটতে পথ অতিক্রম করছিলেন। মনে ভয় তাই শ্রীশ্রী ঠাকুরের নাম জপ করে চলেছেন। কিন্তু সামনে তাকিয়ে তিনি মনে যেন ভরসা পেলেন। যোগেশ্বর বাবুর সামনে কিন্তু একটু দুরে এক বৃদ্ধ হেঁটে চলেছেন এবং মাঝে মাঝে পিছনে ফিরে তাকাচ্ছেন। বৃদ্ধের পায়ে লাল কেটস, হাতে লাঠি এবং গায়ে কম্বল। যোগেশ্বর বাবু হাঁপাতে হাঁপাতে আর দৌড়ে ওই বৃদ্ধকে পার হয়ে যাচ্ছিলেন তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন-
আপনি দৌড়ান ক্যান?
যোগেশ্বর বাবু - আমি একা পড়েছি। আমার সঙ্গের সকল লোক চলে গেছেন।
বৃদ্ধ ভদ্রলোক- কোথায় গিয়েছিলেন?
যোগেশ্বর বাবু- শ্রীশ্রী সত্যনারায়ণ পুজো ছিল, সেখানে গিয়েছিলাম।
বৃদ্ধ ভদ্রলোক- কী! সত্যনারায়ণ?
যোগেশ্বর বাবু- শ্রীশ্রী রামঠাকুরের প্রচার করা সত্যনারায়ণ।
বৃদ্ধ ভদ্রলোক- দৌড়ান ক্যান! আমি তো ঠাকুরকে দেখেছি।
যোগেশ্বর বাবু- আমি একা।
বৃদ্ধ ভদ্রলোক- ঠাকুর ত বলেছেন- 'আমি ত আপনাগো সঙ্গে সঙ্গেই থাকি।'
আপনি একলা কীভাবে? গুরু ত সঙ্গে থাকেন। আপনি একলা কী করে হলেন?

এভাবে বৃদ্ধের সাথে সাথে যোগেশ্বর বাবু হেঁটে বিদুর্ কর্ত্তা চৌমুহনীতে এলেন। কিন্তু পাশে তাকিয়ে তিনি দেখেন ওই বৃদ্ধ অদৃশ্য হয়ে গেছেন। তার চার দিকে তাকিয়ে কোথাও তিনি দেখতে পেলেন না এই বৃদ্ধকে।
ভয় বিপদ বা যে কোনো অবস্থায় ঠাকুর আশ্রিতদেরকে উদ্ধার করেন। এ তাঁর একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এই স্মৃতি যোগেশ্বর বাবু যত দিন জীবিত ছিলেন ততদিনই প্রচার করে গেছেন। ঠাকুর সব সময়ই আশ্রিতের সাথে থাকেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন