একবার অফিস থেকে আমাকে টেলিগ্রাম সংক্রান্ত কাজের ব্যাপারে কিছুদিনের
জন্য Statesman পত্রিকা অফিসে পাঠায়। সেখানে মুসলমান বাবুর্চিরা টিফিন দিত।
সে যুগে হিন্দু হয়ে মুসলমানের হাতে জল খাওয়া সমাজের দিক থেকে খুবই গর্হিত
কাজ বলে গন্য হতো। আমারও এ ব্যাপারে মানসিক প্রস্তুতি ছিল না।
দ্বিধাগ্রস্থ মন নিয়ে জিগগেস করলাম ঠাকুরকে। ঠাকুর তখন কালীঘাটে আমাদের
বাসায় ছিলেন। আমার সমস্যার কথা শুনে মৃদু হাসলেন এবং সহজ কন্ঠেই বললেন,
-'ইহাতে কোন দোষ নাই।' তারপর ধর্মের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের কথা অতি সুন্দর
ভাবে ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিলেন। আমার মনের সংশয় ও দ্বন্দ বিদূরিত হলো। এই
প্রসঙ্গে বলি - ঠাকুরের অনেক মুসলমান ধর্মালম্বী ভক্তও ছিলেন। ঠাকুরের
ধর্মাচরণের মধ্যে কোনরূপ সাম্প্রদায়িক মনোভাব না থাকার জন্য নোয়াখালী,
চট্টগ্রাম ও ফরিদপুরের বহু বিশিষ্ট মুসলমান ধর্মালম্বী মানুষ ঠাকুরকে
শ্রদ্ধা করতেন। সকল জাতি ও ধর্মের মধ্যে তিনি 'সত্য'কে দেখতেন। সেইজন্যই
দেখা যায়, বঙ্গ বিভক্ত হওয়ার পরও পূর্ববঙ্গে ঠাকুর সুস্থ পরিবেশের মধ্যেই
জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত অতিবাহিত করেছিলেন।
~ কৃপাসিন্ধু রামঠাকুর। শ্রী মনোরঞ্জন মুখোপাধ্যায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন