বুধবার, ১২ আগস্ট, ২০১৫




উল্টোরথের দিনে ঠাকুরের খেয়াল হল সেদিন গাছ কিনতে হয়। তাই ডাঃ দাসগুপ্তকে নিয়ে শ্রীশ্রী ঠাকুর ডাক্তারের গাড়িতে গিয়ে চরে বসলেন। পেছনের সিটে ঠাকুর এবং ডাঃ দাসগুপ্তের সহধর্মিনী মানসনলিনী দেবী। সামনের সিটে ড্রাইভার এবং ডাক্তার দাশগুপ্ত। মৌলালী ছাড়িয়ে যেতেই তীব্র শব্দে ছিড়ে পড়ল ট্রাম লাইনের ইলেকট্রিকের তার। তখন বেশ ভালো বৃষ্টি হচ্ছে, আকাশে বিদ্যুত চমকাচ্ছে, বাইরে ঝড়ো হাওয়া বইছে। বজ্রপাতেই ট্রামের তার ছিড়েছে এটা নিশ্চিত। ডাঃ দাসগুপ্তের গাড়ির চারদিক দিয়ে এই ইলেকট্রিকের তার ঘিরে পড়ল। রাস্তা ও দোকানের লোকগুলি হায় হায় করতে থাকল এই বুঝি তাদের মৃত্যু হয়। গাড়িটি পুড়ে যায়। বহু লোক সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলেও কারেন্টের ভয়ে কেউ সামনে আসছে না। কিন্তু একি ভগবানের অপার লীলা। কোত্থেকে একটি কালো কুচকুচে সাত আট বছরের শিশু ছুটে এলো গাড়ির কাছে। তার মাথা ভর্তি কালো চুল, উজ্জ্বল দুটি চোখ। ছেলেটি এসে তারটি খুলে দিল। কিন্তু তার গায়ে ও হাতে বিদ্যুতের তারে কিছুই হল না। সে হাসি মুখেই কাজটি করল। তারপর একটি ছেলে ছোট্ট একটি চারাগাছ নিয়ে ডাক্তারবাবুর কাছে এসে জিগ্যেস করল- উল্টোরথে গাছ কিনতে হয়। নেবেন এই গাছটি? ঠাকুর বললেন- ডাক্তারবাবু গাছটি কিনে নিন। ছেলেটি কোথায় চলে গেল। গাড়ি চলেছে পার্ক সার্কাস এর দিকে। সামনের রাস্তার বরাবরে জায়গা অনেকটা ফাঁকা।
এতক্ষণ শ্রীশ্রী ঠাকুর গাড়ির পেছনের সিটে তন্ময় হয়েছিলেন। এবার অত্যন্ত আনন্দিতভাবে উজ্জ্বল মুখে শ্রীশ্রী ঠাকুর বললেন- "ডাক্তার বাবু আমাদের যে বিপদ থাইক্যা বাচাইছে ছেলেটি কে চিনতে পারছেন?"
ডাক্তারবাবু উত্তর দিলেন- না ঠাকুর চিনতে তো পারিনি।
ঠাকুর বললেন- জানেন ইনি বিপদে মধুসূদন। এই বালকটিই শ্রী মধুসূদন।
ঠাকুর আবার জিগ্যেস করলেন -'বলেন ত গাছটি আপনারে কে দিল?'
ডাক্তার বাবু পেছন ফিরে ঠাকুরের দিকে তাকালেন চোখে অপার জিজ্ঞাসা নিয়ে। যেন বলতে চাইছেন-ঠাকুর আপনিই জানেন।
ঠাকুর আবার বললেন- তিনই আপনার গোপাল। বড় হইলেই তিনি হন গোবিন্দ।
ঠাকুর ডাক্তারবাবুকে মন্ত্র দিয়েছিলেন- 'গোপাল গোবিন্দ রাম শ্রী মধুসূদন।'

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন